বাংলার সংস্কৃতি রচনা [সঙ্গে PDF]

সভ্যতা ও সংস্কৃতি, আমাদের জীবনের এই দুটি অংশ পরস্পরের সঙ্গে এমনভাবে জড়িয়ে রয়েছে যে তা বিশ্লেষণ করা যায় না।সভ্যতার ক্রমবিকাশের সাথে সাথে প্রত্যেক জাতির সংস্কৃতিরও উন্নয়ন ঘটেছে। সংস্কৃতি হল আমাদের জীবনাচরণের এক বিশেষ অঙ্গ। বাংলার সংস্কৃতি বাঙালি জাতির এক গৌরবময় প্রকাশ। বাঙালি জাতিকে সম্পূর্ণ চেনা যায় বাংলার সংস্কৃতিকে দেখে। এই নিয়েই আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয় বাংলার সংস্কৃতি রচনা।

 বাংলার সংস্কৃতির একটি ছবি

ভূমিকা:

সেই আদিকাল থেকে মানুষ যেভাবে তার প্রতিদিনকার জীবনকে যাপন করে, সেই জীবনচর্যার সৃজনশীল শিল্পীসুলভ রূপকেই মানুষ আপন সংস্কৃতি রূপে উপভোগ করে। তাই সমাজে সংস্কৃতি কোন বাহ্যিক আড়ম্বর নয়; এটি নিতান্তই একটি সমাজের মানুষের জীবনচর্যার সৃজনশীল ঐতিহাসিক রূপ তথা অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।

সমাজের এই অঙ্গের মধ্যে দিয়ে সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর ঐতিহাসিক ঐতিহ্য পৃথিবীর বুকে বেঁচে থাকে, বয়ে চলে, এবং নিরন্তর সমৃদ্ধ হয়। সুতরাং সংস্কৃতি বিষয়টির সংজ্ঞা কোন সংকীর্ণতার বেড়াজালে আবদ্ধ নয় বরং তা অত্যন্ত ব্যাপক। মূলত একটি জাতির ইতিহাস, ভাষা,  সার্বভৌমত্ব, চিন্তাভাবনা, শিল্পকলা, সাহিত্য তথা যা কিছু সৃজনশীল সেই সমস্ত কিছুই সংস্কৃতির অন্তর্গত।

আমাদের এই বিশ্বে প্রত্যেকটি জাতির নিজ নিজ সংস্কৃতি তথা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আছে। কোন জাতির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ইতিহাস ও বর্তমান এর মধ্যে যোগসুত্র রচনা করে  সেই জাতিকে আত্মবিস্মৃতির কবল থেকে উদ্ধার করে। ফলে মানুষ শেখে নিজের ঐতিহাসিক জীবনচর্যা এবং সাংস্কৃতিক ইতিহাস এর প্রতি গর্ব অনুভব করতে। 

সংস্কৃতির স্বরূপ:

সংস্কৃতিকে আমরা সহজ কথায় বলতে পারি কৃষ্টি। এই “কৃষ্টি ” শব্দটির অর্থ হলো কর্ষণ করা অথবা চাষ করা। এই সংস্কৃতি শব্দটির ইংরেজি রূপটি হল “Culture”. এই শব্দটি ইংরেজি সাহিত্যে প্রথম বার ব্যবহার করেছিলেন ফ্রান্সিস বেকন ষোলো শতকের শেষের দিকে। সংস্কৃতি সনাক্তকরণের জন্য কোনো নির্দিষ্ট করা বৈশিষ্ট্য বা গন্ডি নেই। 

সমাজতত্ত্ববিদ Jones বলেছেন যে, “মানুষ যা সৃষ্টি করে তার সামগ্রিক রূপই হচ্ছে সংস্কৃতি।” নৃবিজ্ঞানী E.B.Tylor এর মতানুযায়ী, “সমাজের সদস্য হিসেবে অর্জিত আচার-আচরণ, ব্যবহার, জ্ঞান, বিশ্বাস, শিল্পকলা, নীতি-প্রথা, আইন ইত্যাদির জটিল সমাবেশই হল সংস্কৃতি।”

মানবজীবনে সংস্কৃতি:

সংস্কৃতি হলো প্রবহমান মানব জীবনের মূলধারা। প্রত্যেক দেশ ও জাতি তাদের জীবনচর্যার নিজস্বতা ও  গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যসমূহকে এই সংস্কৃতির মাধ্যমে সমগ্র বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে চায়। এই তুলে ধরার মধ্যে দিয়ে গড়ে ওঠে একটি জাতির জাতীয়তাবাদ, আপন ইতিহাসের প্রতি তৈরি হয় শ্রদ্ধা এবং অহংকার। এ পৃথিবীতে প্রত্যেক মানুষের সাংস্কৃতিক জীবনের পরিপূর্ণ বিকাশ অত্যন্ত প্রয়োজন।

প্রত্যেক মানুষই চায় নিজের ভিতর লুকিয়ে থাকা অনন্ত সম্ভাবনাকে প্রকাশ করতে। শুধুমাত্র মানুষের সাংস্কৃতিক জীবনের পূর্ণ বিকাশের মাধ্যমেই সম্ভাবনার আত্মপ্রকাশ সম্ভব। সংস্কৃতির সহায়তাতেই প্রত্যেক জাতি তাদের গৌরবময় রূপটি পূর্ণরূপে প্রস্ফূটিত করার চেষ্টা করে। 

বাংলা ও সংস্কৃতি:

পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে পৃথিবীর বুকে প্রত্যেকটি জাতির সংস্কৃতিই নিজ নিজ মহিমায় বর্তমান। বাংলাও তার ব্যতিক্রম নয়। এই ভারতীয় উপমহাদেশ হল পৃথিবীর বুকে প্রাচীন সভ্যতা গুলির অন্যতম একটি। কোন সভ্যতা যত প্রাচীন হয়, তার ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতিও ততই সমৃদ্ধ হয়।

ভারতবর্ষের পূর্বদিকে বাংলাও উপমহাদেশের এই মহান ঐতিহ্যশালী সংস্কৃতির সাক্ষী তথা একটি অন্যতম প্রধান অঙ্গ। বাংলা সুপরিচিত ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে মধুরতম অংশরূপে। ভারতবর্ষের এই অংশের ভূপ্রকৃতির মতোই এখানকার সংস্কৃতিও বৈচিত্র্যময় এবং ততোধিক মধুর।

সেই প্রাচীনকাল থেকে ভারতবর্ষের মহান ইতিহাস এবং ঐতিহ্যকে সঙ্গী করে বাংলার সংস্কৃতি বয়ে চলেছে তার আপন প্রবাহমানতার ধারায়। সমগ্র ভারতবর্ষের মধ্যে থেকেও তার সংস্কৃতি যেন সকলের থেকে ভিন্ন, হয়তো বা সবচেয়ে বেশি বৈচিত্র্যময়। এখানকার অধিবাসীরা বাঙালিরা আপন অনন্য সংস্কৃতির মহিমায় সমগ্র উপমহাদেশের বুকে সুপরিচিত।

বাংলার সংস্কৃতির ধরণ: 

পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে বাংলা সংস্কৃতি অত্যন্ত বৈচিত্র্যময়, এবং সমগ্র ঐক্যবদ্ধ ভারতের মধ্যে থেকেও আপন অনন্যতার মহিমায় অন্য সকলের থেকে আলাদা। এখানকার সংস্কৃতির স্বরূপকে বোঝার জন্য আধুনিক যুগের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের গবেষণা থেকে শুরু করে ইতিহাস চর্চা, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য চর্চা ইত্যাদি জ্ঞানমূলক বিষয় নিয়ে আলোচনার ধারা চলে আসছে। দীর্ঘ গবেষণা তথা অধ্যায়নের পর বাংলার সংস্কৃতিকে ড. ওয়াকিল আহমেদ মূলত তিনটি ভাগে  বিভক্ত করেছেন।

(ক) বাংলার নগর তথা শহরাঞ্চলের সংস্কৃতি:

শহরের মানুষের যান্ত্রিক জীবন ইট কাঠ পাথরের চার দেওয়ালে আবদ্ধ। যা এক কথায় লোহার খাচার থেকে কম কিছু নয়। তবে এই নগর জীবনে পশ্চিমা তথা বৈদেশিক সব কিছুরই কমবেশি প্রভাব রয়েছে। তাছাড়া নগর যেহেতু সকল অঞ্চলের মানুষের মিলন স্থান সেজন্য বিভিন্ন ধরনের আলাদা আলাদা সংস্কৃতির মিলন ও মিশ্রণে এখানে গড়ে উঠেছে মিশ্র সংস্কৃতি।

(খ) বাংলার লোকসংস্কৃতি: 

লোকসংস্কৃতিকে এক কথায় আমরা বলতে পারি গ্রামবাংলার সংস্কৃতি। এই সংস্কৃতির সহজে পরিবর্তন হয় না। বিদেশি, পশ্চিমা ও নগর সংস্কৃতির প্রভাব এখানে খুব কমই পড়ে। সেই সুদূর অতীতকাল থেকে গ্রাম বাংলার মানুষেরা তাদের প্রতিদিনকার জীবন চর্চার মাধ্যমে নিজেদের এই সংস্কৃতির ধারাকে বয়ে নিয়ে চলেছেন। 

(গ) আদিম সংস্কৃতি:

 এই সংস্কৃতিটি হলো বাংলায় বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সংস্কৃতি। এই ধরণের সংস্কৃতি স্থায়ী ও অপরিবর্তনীয়। বহির্জগতের সাথে তাদের সম্পর্ক খুবই কম বললেই চলে।  তারা নিজস্ব আচার, অনুষ্ঠান, ধর্মীয় বিশ্বাস ও জীবন প্রণালীতে অভ্যস্ত ও শ্রদ্ধাশীল। তারা সাধারণত চাষাবাদ, শিকার ও ফলমূল সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করে সংসার চালায়।  গ্রহণ-বর্জনের রীতি না থাকায় এবং আনাগোনা ও লেনদেনের অভাবে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের সাংস্কৃতিক বিকাশ ও বিস্তার প্রায় থেমেই রয়েছে।

বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য:

বাংলার প্রাকৃতিক এবং সামাজিক জীবনের সাথে সামঞ্জস্য বজায় রেখে এখানকার সাংস্কৃতিক জীবনধারার বিকাশ ঘটেছে। বাংলা হল  হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানসহ নানা জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের মিলনভূমি। এখানে সবাই মিলেমিশে একসাথে প্রাণ খুলে তাদের সামাজিক ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করে থাকেন।

একে অপরের  সাথে তারা আনন্দ ভাগ করে নেন। একে অন্যের দুঃখে সমব্যাথী হন। একের উৎসবে ও অনুষ্ঠানে অন্যরা যোগদান করে। এখানকার মানুষেরা আপন ঐতিহ্যের মহিমায় স্বভাবতই পরম অতিথিবৎসল। বাংলার অতিথি আপ্যায়নের কথা সমগ্র উপমহাদেশজুড়ে সুবিদিত। 

গ্রাম বাংলার সংস্কৃতিচর্চা:

বলা হয় যে বাংলার সংস্কৃতির প্রকৃত পরিচিতি ঘটে গ্রাম বাংলার উৎসবগুলির মাধ্যমে। বাংলার গ্রামগুলির প্রধান প্রধান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মধ্যে লোকসাহিত্য, সঙ্গীত, ঋতুভিত্তিক উৎসব, বিভিন্ন প্রত্মতাত্ত্বিক নিদর্শন, খেলাধুলা, নানা সামাজিক প্রথা প্রভৃতি রয়েছে। তাছাড়া গ্রামবাংলার মুখে অনন্য গ্রাম্য সংস্কৃতি চর্চার ধারায়  ঈশ্বরে বিশ্বাস, ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রেখে গ্রামীণ কবি ও সাহিত্যিক সবাই মিলে লোক সাহিত্য সৃষ্টি করেছেন।

লোক সাহিত্যের মধ্যে আছে ছড়া, গীতিকা, ধাধাঁ, ব্রতকথা, উপকথা, রূপকথা, প্রবাদ-প্রবচন, খনার বচন ইত্যাদি। গ্রামীণ সঙ্গীতের মধ্যে রয়েছে ভাটিয়ালী, ভাওয়াইয়া, জারি, মারফতী, পালাগান ইত্যাদির মতন লোক গানের ধারা। সেই সুদূর অতীতকাল থেকে বাংলার পল্লী সমাজের মানুষ এই লোকগান গুলিকে নিজেদের জীবনচর্যার এক অন্যতম অংশ করে তুলেছেন।

গ্রামীণ উৎসব ও বাঙালির আমেজের মধ্যে রয়েছে বাংলা নববর্ষ, নবান্ন উৎসব, শীতের পিঠা-পুলির উৎসব ইত্যাদি। গ্রামীণ খেলাধুলার মধ্যে দাঁড়িয়া বান্ধা, গোল্লাছুট, হা-ডু-ডু, নৌকা বাইচের মতো সংস্কৃতি আজ কালের গর্ভে নিমজ্জিত। কিন্তু, যৌথ পারিবারিক প্রথা, সামাজিক বন্ধন ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হচ্ছে। তথাপি শান্তি প্রিয় মানুষ সামাজিক সংস্কৃতি পালনের মধ্য দিয়ে ঐক্য ও পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হচ্ছেন।

বাংলার নগর সংস্কৃতি:

গ্রাম বাংলার সংস্কৃতির মধ্যে বাংলার প্রকৃত রূপ ধরা পড়া হয় এমনটা বললেও, বাংলার নগর সংস্কৃতিকে কোনোভাবেই অবজ্ঞা বা অবহেলা করা চলে না। বাংলার নগর সংস্কৃতিতে বিদেশি পাশ্চাত্য বা মিশ্র প্রভাব থাকলেও এই সংস্কৃতিও আপন স্বকীয় মহিমায় মহিমান্বিত। বাংলার নগরগুলি আধুনিক জ্ঞান চর্চার পীঠস্থান। নতুন ধরনের চিন্তা, শিল্প, সৃজনশীলতা এইসব নগরগুলিতে প্রাধান্য পায়।

ঐতিহ্যকে ধারণ করেও নতুনকে গ্রহণের মধ্যে দিয়ে সমাজের সংস্কৃতিই সমৃদ্ধ হয়। এই সমস্ত নগরগুলি বাংলার বুকে আধুনিক কাব্য চর্চা, সঙ্গীত ভাষা সাহিত্য শিল্পকলা ইত্যাদি জ্ঞানমূলক কৃষ্টিকে প্রাধান্য দেয়। তাছাড়া এর পাশাপাশি বাংলা নগর বিশেষত কলকাতার দুর্গাপুজো সমগ্র বিশ্বে বিখ্যাত। দুর্গাপূজা ছাড়াও বিভিন্ন উৎসবে বাংলা শহুরে বাঙালিরা আপন সংস্কৃতির পালন এবং যাপনে মেতে ওঠে।

বাংলার সংস্কৃতির অবক্ষয়:

বিভিন্ন কারণে বর্তমান কালে বাংলা তথা সমগ্র বিশ্বজুড়ে বিশেষত নগর গুলির সংস্কৃতির ব্যাপক অবক্ষয় সুস্পষ্ট রূপে চোখে পড়ছে। কৃষ্টি তার সৃজনশীল সত্তা হারিয়ে ফেলে সংকীর্ণ চটকদার উপস্থাপনায় বিকশিত হচ্ছে। ফলে সংস্কৃতি রূপান্তরিত হচ্ছে অপসংস্কৃতিতে। আর তার কুপ্রভাব সমগ্র জাতিকে ধীরে ধীরে গ্রাস করেছে। মানুষের সাধারণ চিন্তা তথা শিক্ষা থেকে নৈতিকতা অপসারিত হয়ে মানুষ পরিণত হচ্ছে যুক্তির দাসে।

বর্তমানকালের এই বস্তু মূলক সমাজ সভ্যতার যুগে ঐতিহ্যশালী সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জ থেকে কোন অংশে কম নয়। বিশেষত যে সময়ে সংগীতের নামে উন্মত্ত কর্ণবিদারী কোলাহল, শিল্প ও অভিনয়ের নামে অপ্রাসঙ্গিক কাহিনীর অবতারণা এবং শুধুমাত্র চিত্তবিনোদন হেতু অবাধ যৌনতার প্রদর্শন ঘটে সেই যুগে মানুষকে আপন সংস্কৃতির ভিত্তিমূলে পুনঃস্থাপন করা যথেষ্ট কঠিন বিষয়।

অবক্ষয় প্রতিকারের উপায়:

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বিশ্বায়নের যুগে একই পৃথিবীর বাসিন্দা হিসেবে বিশ্ব সাম্রাজ্যের মধ্যে থেকেই আমাদের স্বকীয় বৈশিষ্ট্য, স্বতন্ত্র অস্তিত্ব ও সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। আর এ জন্য আমাদের বেশ কিছু করনীয় রয়েছে। সেগুলি হলো :

  • ঔপনিবেশিক মানসিকতা থেকে বেরিয়ে এসে বিদেশি পশ্চিমা সংস্কৃতির অন্ধ অনুকরণ বন্ধ করতে হবে। 
  • বিদেশী সংস্কৃতির মোকাবিলায় দেশীয় সংস্কৃতিকে আরো বেশি যুগোপযোগী ও প্রাসঙ্গিক  করে তুলতে হবে।
  • বিদেশী সংস্কৃতির খারাপ দিকগুলো বাদ দিয়ে শুধুমাত্র  উত্তম দিকগুলি আমাদের গ্রহণ করবার চেষ্টা করতে হবে।
  • আমাদের দেশীয় সুসংস্কৃতি তথা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে আধুনিক গনমাধ্যমের সাহায্য নিয়ে বিশ্বের সর্বপ্রান্তে ছড়িয়ে দিতে হবে।
  • মানুষ যাতে আরও বেশি আত্মচিন্তা এবং আত্ম-অনুশীলনের দিকে জোর দেয় সেজন্য শিক্ষাব্যবস্থার ভিত্তিমূলে পরিবর্তন ঘটাতে হবে।
  • ছোটবেলা থেকে শিশুদের আপন সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের ব্যাপারে সচেতন করে তুলতে হবে। 
  • মানুষ যাতে আরো বেশি মুক্ত চিন্তার সুযোগ পায় তেমন পরিবেশের বিকাশ ঘটাতে হবে।
  • দেশীয় সংস্কৃতি রক্ষায় সরকারি বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা আরো বাড়িয়ে তুলতে  হবে।

উপসংহার:

প্রত্যেকটি জাতির জন্য তার সংস্কৃতি সমাজ জীবনের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সংস্কৃতি হল সমাজের এক প্রত্যক্ষ প্রতিচ্ছবি। আর বাঙালি সংস্কৃতির গর্ভ হল বাংলার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এবং ইতিহাসের ক্রমিক প্রবাহমানতা। এখানে বিদ্যমান সাম্প্রদায়িকতা, বিভেদহীনতা এবং একে অপরকে আপন করে নেবার ইচ্ছা। মনে রাখা দরকার কোন জাতির সংস্কৃতির মৃত্যু হলে সেই জাতির স্বকীয় সত্তার মৃত্যু ঘটে।

তাই অপসংস্কৃতিকে আজ যথাসম্ভব বর্জন করে বাঙালিকে আপন সংস্কৃতিচর্চায় ব্রতী হতে হবে সর্বাগ্রে। তবেই এই পৃথিবীর বুকে বাঙালির অস্তিত্বসংকটকে রুখে দেওয়া সম্ভব। বাঙালি জাতি সংস্কৃতি তথা সামাজিক অবক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা পেলে তা সমগ্র ভারতবর্ষের কাছে এক উদাহরণ হয়ে থাকবে। বাঙালির চেতনার এই পরিবর্তনের মাধ্যমে তখন ত্বরান্বিত হবে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন।


বাংলার সংস্কৃতি রচনাটি পড়ে আপনার কেমন লাগলো আপনার ব্যাক্তিগত মতামত কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানান।আমরা সব সময় সচেষ্ট থাকি সবার থেকে সুন্দর ও আপনার মনের মতো করে একটি রচনা তুলে ধরার। এখানে নেই এমন রচনা পাওয়ার জন্য রচনাটির নাম কমেন্ট করে জানান।দ্রুততার সঙ্গে আমরা উক্ত রচনাটি যুক্ত করার চেষ্টা করবো।সম্পূর্ণ রচনাটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

আরও পড়ুন:

বাংলার উৎসব রচনা
বাংলা নববর্ষ রচনা
Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন