তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা [সঙ্গে PDF]

আধুনিক সভ্যতার এই বিশ্বায়নের যুগে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার সর্বত্র। ভবিষ্যতে আরও উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে হলে তথ্য প্রযুক্তির কোনো বিকল্প হয় না। তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার , নেতি বাচক দিক সব কিছু বিশ্লেষণ করে আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনা বৈশিষ্ট্য চিত্র

ভূমিকা:

আধুনিক যুগে যখন বিশ্বায়নের প্রভাব পৃথিবীর সর্বোচ্চ স্তর থেকে আমাদের ঘরের অন্দরমহল পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে তখন বিশ্বব্যাপী তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যাপক গুরুত্বকে অস্বীকার করা যায় না। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি সাথে সাথে প্রয়োজন ও গুরুত্ব বেড়েছে তথ্য ও যোগাযোগেরও।

আর ক্রমবর্ধমান তথ্য এবং যোগাযোগের অব্যবস্থা দূর করে মানুষের জীবনকে আরো সহজ এবং স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলার ক্ষেত্রে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে প্রযুক্তি। প্রযুক্তি হল আধুনিক যুগে মানুষের উদ্ভাবিত সেই জাদুকাঠি যার প্রয়োগে মানুষ বারবার একদিকে নিজের সমাজ তথা ব্যক্তিগত জীবনকে যেমন সহজতর করে তুলেছে, তেমনই সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে বহুগুণে।

সেই আধুনিক সভ্যতারই অগ্রগতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুটি উপাদান তথ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রযুক্তির ব্যাপক প্রভাব সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনার উদ্দেশ্যেই এই উপস্থাপনা।

আধুনিক প্রযুক্তির সূচনাকাল:

আধুনিক প্রযুক্তির জন্মলগ্ন বলে ধরে নেওয়া হয় উনবিংশ শতাব্দীর সূচনায় শিল্প বিপ্লবের কালকে। এই সময় থেকেই জীবনের সর্বক্ষেত্রে প্রযুক্তির প্রয়োগ ব্যাপকহারে আরম্ভ হয়। তবে তখনো পৃথিবীর জনসংখ্যা এবং জীবনযাত্রাগত জটিলতা কম থাকার দরুন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব তেমনভাবে অনুভূত হয়নি। কিন্তু সময় যত এগোয় ততই শিল্প বিপ্লবের ব্যাপক উৎপাদনের ফল মানুষ পেতে শুরু করে।

এরই সাথে পৃথিবীর জনসংখ্যাও পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকায় মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রার ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি হয়। মোটামুটি বিংশ শতাব্দীর শুরু থেকেই বিশ্বজুড়ে তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তির অভাবজনিত প্রয়োজনীয়তা বিশেষভাবে অনুভূত হতে থাকে। প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে প্রয়োজনের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য অনুভূত প্রয়োজনের অনুকূলে উপযোগী প্রযুক্তি উদ্ভূত হয়।

কি এই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি:

সাধারণভাবে দেখতে গেলে মনে হবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি হলো এমন এক প্রযুক্তি যা আধুনিক সভ্যতার তথ্য ও যোগাযোগ সংক্রান্ত ব্যাপারে সহায়তা করে থাকে। কিন্তু আসলে এই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিস্তার শুধুমাত্র এই দুটি ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নেই। প্রকৃতপক্ষে বর্তমান যুগে তথ্যকে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। এবং এই তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই বিকাশ লাভ করেছে আধুনিক যুগের বিভিন্ন ক্ষেত্র।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বা ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত সেই সকল তথ্যের সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থাপনা তথা বিতরণের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ইনফর্মেশনাল ম্যানেজমেন্টের কাজ করে থাকে। বিশ্বব্যাপী এই মহাযজ্ঞ সম্পাদনের জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ঘনিষ্ঠভাবে নির্ভর করে কম্পিউটিং, মাইক্রোইলেকট্রনিক্স, টেলিকমিউনিকেশন ইত্যাদি বিষয়গুলির ওপর। 

ইতিহাসের পাতায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি:

ইতিহাসে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অভাবজনিত প্রয়োজনীয়তা প্রথম অনুভূত হয় বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে সম্ভবত প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অবসানের পর থেকেই পৃথিবীর আন্তর্জাতিক আর্থসামাজিক চেহারা দ্রুত বদলে যেতে থাকে। বিশ্বজুড়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণার ঢল নেমে যায় নতুন আবিষ্কারের মাধ্যমে নিজের দেশকে শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে।

তারপর বিংশ শতকের মধ্যভাগে বিশ্বজুড়ে আরো একবার দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের দামামা বেজে যায়। পৃথিবীর ইতিহাসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেই সর্বপ্রথম তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সামান্যতম ব্যবহার হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে পৃথিবীর পটচিত্র আরো তাড়াতাড়ি বদলে যেতে থাকে। পৃথিবীর দুই মহাশক্তির মধ্যে ঠান্ডা যুদ্ধের আবহে বিশ্বজুড়ে বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির ক্ষেত্রেও নোংরা প্রতিযোগিতা শুরু হয়।

এর ব্যাপক প্রভাব পড়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও। এরপর সত্তরের দশকে পৃথিবীতে ইন্টারনেট এর আগমন ঘটলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে একপ্রকার বিপ্লব ঘটে যায়। সেই সময় থেকে অতি দ্রুত পৃথিবীতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির চরিত্র বিবর্তিত হতে থাকে।

বর্তমানের আলোকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি:

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য সত্তরের দশকেই প্রথম তথ্যপ্রযুক্তি শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছিল। বর্তমান যুগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গতিবিধি আধুনিক পৃথিবী তথা ব্যক্তিগত জীবনের সর্বত্র। আধুনিক শহুরে জীবনের সম্ভবত এমন কোন ক্ষেত্র নেই যেখানে আজকাল তথ্যপ্রযুক্তি আধিপত্য বিস্তার লাভ করে নি।

সময় যতই এগোচ্ছে জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির গুরুত্ব পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। সেই সঙ্গে প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন ঘটিয়ে চলেছে। জীবনের সর্বক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের প্রভাবও অনুভূত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। 

তথ্যপ্রযুক্তি ও শাসন সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনা:

আধুনিক বিশ্ব ব্যবস্থার ধারক বাহক তথা পরিচালক হল তথ্যপ্রযুক্তি। যে পৃথিবীতে তথ্য বা ডেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং মূল্যবান সম্পদ বলে গণ্য হয় সেখানে তথ্যপ্রযুক্তির এখানে ভূমিকা আশ্চর্যকর নয়। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নির্ধারণ থেকে শুরু করে জাতীয় শাসন সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনা সবকিছুই তথ্য প্রযুক্তির ওপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভরশীল।

এছাড়া সময়ের সাথে সাথে বিশ্বব্যবস্থা যত বেশি করে ডিজিটালাইজেশনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ততই তথ্য প্রযুক্তির উপর আমাদের নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পূর্বে উল্লেখিত হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তির মূল কাজই হলো তথ্য সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ, ব্যবস্থাপনা এবং বিতরণ। নিজস্ব এই অনন্য ভূমিকার দ্বারাই তথ্যপ্রযুক্তি আধুনিক সকল শাসন সংক্রান্ত ক্ষেত্রকে সমূলে নিয়ন্ত্রণ করে। সেজন্য তথ্যপ্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে ত্রুটি ঘটলে যেকোনো সময় শাসন ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে।

চিকিৎসা ও শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি:

তথ্যপ্রযুক্তির অপর একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ শাখা বিস্তার লাভ করেছে চিকিৎসাক্ষেত্রে। তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন নিত্য নতুন আবিষ্কার বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থাকে আমূল বদলে দেওয়ার পথে এগিয়ে চলেছে। এ প্রসঙ্গে সর্বপ্রথম উল্লেখ করতে হয় রোবোটিক্স এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংক্রান্ত আবিষ্কার ও তার প্রয়োগের কথা।

এই প্রয়োগের মাধ্যমে বিভিন্ন জটিল রোগ নির্ধারণ ও তার সমাধান সহজে, দ্রুতগতিতে এবং নির্ভুল ভাবে সম্পাদন করা সম্ভব হচ্ছে। এছাড়া তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে নিত্য নতুন আবিষ্কারগুলি আধুনিক শিক্ষাক্ষেত্রকেও বিশেষভাবে প্রভাবিত করছে। শিক্ষাক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর প্রয়োগের ফলে শিক্ষাকে অনেক বেশি বাস্তবমুখী এবং যথাযথ করে তোলা সম্ভব হচ্ছে। 

গবেষণা ক্ষেত্রে ভূমিকা:

আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা, বিশেষ করে গবেষণা সংক্রান্ত ব্যাপারে তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক প্রয়োগ গবেষণার সাবেকি নিয়ম ও সমীকরণগুলিকে অতি দ্রুত বদলে দিচ্ছে। তথ্য প্রযুক্তির অভাবনীয় উন্নতির ফলে জ্ঞান আহরনের জন্য এখন আর মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয় না। ঘরে বসেই আঙ্গুলের একটি ছোঁয়ায় বিশ্বমানের গবেষণাপত্র চোখের সামনে ভেসে উঠতে পারে।

তাছাড়া গবেষণা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় যেমন: আবহাওয়া নির্ণয়, জলবায়ুর চরিত্র নির্ণয়, ভূ-প্রাকৃতিক গবেষণা, জরিপ সংক্রান্ত গবেষণা ইত্যাদি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রয়োগের ফলে অত্যন্ত নির্ভুল ও সহজ ভাবে নির্ধারণ করা সম্ভব হচ্ছে। সভ্যতার উন্নতির প্রাথমিক পূর্বশর্তই হলো উন্নত গবেষণা। তাই গবেষণার পদ্ধতিকে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের মাধ্যমে সহজতর করে তুলে তথ্যপ্রযুক্তি আদপে পৃথিবীর উন্নতির ক্ষেত্রেই সহায়তা করছে। 

বিনোদন ও তথ্যপ্রযুক্তি:

বিনোদনগত ক্ষেত্রেও বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক ও বহুমুখী প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। বর্তমানে আর বিনোদনের জন্য মানুষকে ঘরের বাইরে পা রাখতে হয় না। ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তির অভিনব মিলনের ফলে ঘরে বসেই একটি ক্লিকে বিশ্বমানের বিনোদনের আনন্দলাভ সম্ভব হচ্ছে।

মোবাইল, রেডিও, টেলিভিশন সবক্ষেত্রেই তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহারের ফলে মানুষের কাছে বিনোদন পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি উপভোগ্য হয়ে উঠছে  তাছাড়া বিনোদনের ক্ষেত্রেও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগের বিষয়টিও আজ সুবিদিত।

যোগাযোগ বিপ্লব:

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অপর একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অবদান হল যোগাযোগ ক্ষেত্রে আমুল বিপ্লব ঘটিয়ে দেওয়া। এই যোগাযোগ বলতে তথ্য আদান-প্রদান এবং পরিবহন সংক্রান্ত যোগাযোগ দুইই বোঝানো হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির বৈপ্লবিক বিবর্তনে আবির্ভূত হয়েছে ফেসবুক, টুইটার কিংবা ইমেইল এর মতন ভার্চুয়াল সামাজিক তথা তথ্য আদান-প্রদানকারী মাধ্যমগুলি।

এইসকল মাধ্যমগুলিকে কাজে লাগিয়ে মুহুর্তের মধ্যে অতি মূল্যবান তথ্য সুরক্ষিতভাবে পৃথিবীর এক কোণ থেকে অপর কোনায় পাঠিয়ে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। তাছাড়া তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে নিত্যনতুন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের ফলে পরিবহনগত ক্ষেত্রেও ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে গেছে। এক্ষেত্রেও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এর ব্যবহারের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয়।

ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ভূমিকা:

সমাজে সর্বব্যাপী তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক প্রসারের ফলে তথ্যপ্রযুক্তি সুযোগ করে দিয়েছে বিশ্বজুড়ে বিপুল কর্মসংস্থানের। প্রতিবছর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করে লক্ষ লক্ষ যুবক যুবতী বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা হাজার হাজার কোম্পানিতে নিয়োজিত হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তির কর্মযজ্ঞকে নিয়ন্ত্রণ করে তারাই। পৃথিবীর অনেক দেশে তথ্যপ্রযুক্তি জাতীয় ক্ষেত্রে সর্বাধিক কর্মসংস্থান দেওয়ার মতন রেকর্ডও তৈরি করেছে।

নেতিবাচক প্রভাব:

পৃথিবীকে বিভিন্ন ধরনের সুন্দর উপহার তথ্যপ্রযুক্তি এনে দিলেও এর অনেক কুফলও রয়েছে। তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়েই একদিকে যেমন সমাজের অভাবনীয় উন্নতি সম্ভব হচ্ছে, তেমনি সন্ত্রাসবাদের মতন সমাজের ধ্বংসাত্মক ক্ষেত্রগুলিতেও তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ঘটছে।

একদিকে যেমন মুহুর্তের মধ্যে মূল্যবান তথ্য অতি সহজে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে প্রেরণ এবং সেই তথ্য সংরক্ষণ সম্ভব হয়েছে, তেমনি এই তথ্য-ও-যোগাযোগ-প্রযুক্তিকে ব্যবহার করেই বিশ্বব্যাপী তথ্য চুরি একটি বিশেষ চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ প্রসঙ্গে হ্যাকিংয়ের কথা উল্লেখ করতেই হয়।

তাছাড়া তথ্য প্রযুক্তির ফলে যেমন আধুনিক শপিং ব্যবস্থার বৈপ্লবিক উন্নতি সাধিত হয়েছে, তেমনই ব্ল্যাক মার্কেটের আধুনিকীকরণও তথ্য প্রযুক্তিকে ব্যবহার করেই সম্ভব হয়েছে। এছাড়া তথ্য প্রযুক্তির উপর ব্যাপক নির্ভরশীলতা মানুষের স্বাভাবিক কর্মদক্ষতাকে বর্তমানে বিশেষভাবে প্রভাবিত করছে।

উপসংহার:

প্রযুক্তি হল সভ্যতার কাছে এক প্রকার আশীর্বাদস্বরূপ। আর তথ্যপ্রযুক্তি সেই আশীর্বাদের সবচেয়ে বড় উপহার। বর্তমান যুগ একদিকে যেমন তথ্য নির্ভর, তেমনি প্রযুক্তি নির্ভর। বিজ্ঞানের আশীর্বাদে এই দুয়ের অভিনব মেলবন্ধন আজ সম্ভব হয়েছে।

বহু নেতিবাচক প্রভাব থাকলেও বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির গুরুত্বের কথা আর অস্বীকার করা যায় না। বরং সার্বিকভাবে আমাদের সকলকে প্রচেষ্টা চালাতে হবে কিভাবে তথ্যপ্রযুক্তির নেতিবাচক প্রভাবগুলিকে দূর করে এর ভালো দিকগুলির বিস্তার ঘটানো যায় সে ব্যাপারে।

সাথে এ কথাও মনে রাখতে হবে যে প্রযুক্তির জন্য মানুষ নয়, মানুষের জন্য প্রযুক্তি। তাই প্রয়োজন অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা দূর করে জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমেই বিজ্ঞানের এই উপহারের অস্তিত্বকে সার্থক করে তুলতে হবে।


তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রচনাটি পড়ে আপনার কেমন লাগলো আপনার ব্যাক্তিগত মতামত কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানান।আমরা সব সময় সচেষ্ট থাকি সবার থেকে সুন্দর ও আপনার মনের মতো করে একটি রচনা তুলে ধরার।এখানে নেই এমন রচনা পাওয়ার জন্য রচনাটির নাম কমেন্ট করে জানান।দ্রুততার সঙ্গে আমরা উক্ত রচনাটি যুক্ত করার চেষ্টা করবো।সম্পূর্ণ রচনাটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

আরও পড়ুন:

ডিজিটাল বাংলাদেশ ও প্রযুক্তি ভিত্তিক সেবা
ইন্টারনেট রচনা
প্রযুক্তি নির্ভর বিশ্ব রচনা
করোনাকালে ই- লার্নিং এর ভূমিকা রচনা
Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন