সমাজসেবা রচনা [With PDF]

অনলাইনে বাংলা রচনার এক ও অদ্বিতীয় ঠিকানা banglarachana.com এ আপনাকে স্বাগত জানাই। নিয়মিত নতুন নতুন রচনা আপডেট করা হয় এখানে।আপনার প্রয়োজনের রচনার নাম আমাদের কমেন্ট করে জানান আর যুক্ত থাকুন আমাদের সঙ্গে। banglarachana.com এর পক্ষ থেকে আজকের নতুন উপস্থাপন “সমাজসেবা”/”সেবা ও ছাত্রসমাজ” রচনা।

সমাজসেবা রচনা

ভূমিকা:

মানুষ হল সমাজবদ্ধ জীব।ব্যক্তিমানুষের সব সার্থকতা সমাজকে কেন্দ্র করেই।সমাজে স্বীকৃতির উপর নির্ভর করেই মানুষের সম্পূর্ণতা।কিন্তু মানুষ দল বেঁধে বাস করলেই তা সমাজ হয়না।প্রত্যেক মানুষ একে অপরের কল্যাণের কথা ভেবে সাধ্য মতো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে নিয়ম ও শৃঙ্খলার অদৃশ্য বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বাস করলে সেই জনগোষ্ঠীকে সমাজ বলে।

এই সমাজকে বাঁচিয়ে রাখা ও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ব্যক্তিমানুষের অন্যতম দায়বদ্ধতা।এক সমাজে ধনী,গরীব,সহায় সম্বল হীন নানা রকম মানুষের বাস।শিক্ষিত,অশিক্ষিত সকলকে নিয়েই সমাজ।সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় হল সমাজসেবা।

সমাজসেবার তাৎপর্য:

একটি সমাজে ধনী গরীব নির্বিশেষে সব রকম মানুষের বাস।যাদের আর্থিক অবস্থা ভালো তারা সব রকম সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারে কিন্তু সমাজে যারা গরীব সহায় সম্বল হীন তারা ভাগ্যের দোহায় দিয়ে দুঃখ কষ্টের কঠিন জীবনকেই মেনে নিতে বাধ্য হয়।

এই সমস্ত মানুষের কল্যাণের জন্য,উন্নয়নের জন্য সাহায্য ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার নামই হল সমাজসেবা বা জনসেবা।জনসেবার মূলে রয়েছে নিঃস্বার্থ লোকপ্রীতি।মানুষের উপকার করাই এর একমাত্র উদ্দেশ্য।

সমাজসেবায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা:

সমাজবদ্ধ মানুষের জীবনের অস্তিত্ব পারস্পরিক সাহচর্য ও সহযোগিতার উপর নির্ভরশীল।সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে একে অপরের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব।সমাজের কাছে আমরা সবাই যেমন ঋণী,তেমন এই ঋণ পরিশোধের পবিত্র দায়িত্ব পালনে সমাজের কাছে আমরা সকলেই কোনো না কোনো ভাবে দায়বদ্ধ।ছাত্রছাত্রীরাও একই ভাবে সমাজের সাথে যুক্ত তাই সমাজের প্রতি তাদেরও অনেক দায়িত্ব কর্তব্য।

ছাত্র জীবনে সমাজ সেবার সময় ও সুযোগ সেভাবে থাকেনা।তবুও পড়াশোনার ফাঁকে সমাজসেবামূলক কাজে হাত লাগায় তারা।সমাজ সেবার কাজ অনেক রকম।বন্য,ভূমিকম্প,দুর্ভিক্ষ, পানীয় জলের অভাব, পরিবেশ দূষণ বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে ছাত্রদের করণীয় বিষয় কিছু আছে।

রক্তদান করে প্রাণ বাঁচানো,রাস্তা ঘাট পরিষ্কার করা,গাছ লাগানো,প্রাকৃতিক বিপর্যয় গ্রস্ত মানুষদের উদ্ধার করা,অশিক্ষিত মানুষদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কুসংস্কার অন্ধবিশ্বাসের বিরুদ্ধে সচেতন করার মতো সমাজসেবামূলক কাজে হাত বাড়িয়ে দেয় ছাত্রসমাজ।

সমাজসেবার সার্থকতা:

স্বার্থকেন্দ্রিক বেঁচে থাকার মধ্যে কোনো সুখ নেই।এতে নিজেকে ও নিজের পরিবারকে ঘিরে আত্মকেন্দ্রিকতা এর এক সংকীর্ণ গণ্ডি গড়ে ওঠে। প্রকৃত সুখ রয়েছে সমাজের জন্য দেশের জন্য নিঃস্বার্থ ভাবে কিছু করে বাঁচার মধ্যে।স্বামী বিবেকানন্দ বলতেন –

“তুমি যদি জীবনে নিঃস্বার্থভাবে কারোর জন্যে কিছু করে থাক, অথবা কারোর কল্যাণ চিন্তা করে থাক – সেটুকুই তোমার জীবনের খাঁটি বস্তু,বাকি সবই অলীক স্বপ্ন।”

তিনি আরও বলেছিলেন “জীবে প্রেম করে যেই জন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর।” তিনি জনসেবা ও ঈশ্বর সেবাকে একই পঙক্তিতে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।তাই নিঃসন্দেহে বলা যায় জনসেবা আমাদের জীবনের এক বিশেষ সার্থকতা।

উপসংহার:

ছোটবেলা থেকেই সমাজের প্রতি কল্যাণমূলক চিন্তাভাবনা গড়ে ওঠা উচিত।গোটা সমাজকে জাগিয়ে তোলার জন্য এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সমাজসেবা আজ সামাজিক কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।আর আমাদের সকলেরই উচিত এই সামাজিক কর্তব্য পালন করা।অজ্ঞতা,স্বার্থপরতা,হিংসাকে দূরে সরিয়ে রেখে চিরন্তন কল্যানবোধে উৎসারিত করতে হবে সকলের বিবেকশক্তিকে।

“সমাজসেবা” /”সেবা ও ছাত্রসমাজ” রচনাটি পড়ে আপনার কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।কোনো বানান বা তথ্য ভুল থাকলে কমেন্ট করে জানিয়ে, ঠিক করে দেওয়ার সুযোগ করে দিন। পরবর্তীতে এরকম আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ রচনা পাওয়ার জন্য আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন।ধন্যবাদ।

আরও পড়ুন:

বাংলার ঋতুবৈচিত্র্য
মোবাইল ফোন রচনা
শ্রমের মর্যাদা রচনা
গ্রীষ্মের দুপুর রচনা
Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন