ভারতের জাতীয় সংহতি রচনা [With PDF]

অনলাইনে বাংলা রচনার এক অন্যতম ওয়েবসাইট banglarachana.com এ আপনাকে স্বাগত জানাই।যেকোনো প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা পাওয়ার জন্য আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন।নিয়মিত নতুন নতুন প্রবন্ধ রচনা এখানে আপডেট করা হয়।আজকের নতুন উপস্থাপন – “ভারতের জাতীয় সংহতি” রচনা।

ভারতের জাতীয় সংহতি রচনা

ভূমিকা:

এক নির্দিষ্ট ভৌগলিক পরিবেশে জীবনযাপন করা মানুষ জন,যারা এক রকমের পোশাক পরে,এক ভাষায় কথা বলে,যাদের চিন্তা ভাবনা,লোকসংস্কৃতি,ধর্ম এক। সেই মানবগোষ্ঠীকে এককথায় বলে “জাতি”।এই অর্থে এক রাষ্ট্র এক জাতির প্রতিভূ।

ভারতের মাটিতে বাস করে বহু জাতির মানুষ।ইংরেজ শাসন কালে পরাধীন ভারতে এমন ধারণায় পোষণ করতেন ইংরেজ প্রভুরা।কিন্তু আসলে ভারতীয় জাতি এক ঐক্যবদ্ধ বিচিত্র জাতি।বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য হল ভারতীয় জাতির মূলমন্ত্র। ভারতীয় দের ঐক্য ও অখণ্ডতা হল ভারতের জাতীয় সংহতির মেরুদন্ড।

বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য:

আমাদের দেশ হল বহুজাতির মিলন তীর্থ।তাই ভারতের ভিন্ন ভিন্ন রাজ্যে ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে মানুষ জনের কথা বলার ভাষা,পরনের পোশাক,চিন্তাভাবনা,লোকসংস্কৃতি ধর্মীয় চেতনা সব অনেক রকম। জাতি,ভাষা,ধর্ম কখনই ঐক্যের পরিপন্থী হতে পারেনা।আঞ্চলিক বৈচিত্র্যকে অস্বীকার করা যায় না তাই এই বৈচিত্র্যকে স্বীকার করেই সমগ্র দেশের একতা ও সংহতি।

বিচ্ছিন্নতার কারণ:

বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রবণতা ও বিভিন্ন আন্দোলন বেশ কিছু দশক ধরে জাতীয় জন জীবনে খারাপ প্রভাব ফেলে চলেছে।ভারতের জাতীয় সংহতিকে বিপন্ন করেছে বেশ কিছু আন্দোলন।যাদের মধ্যে অন্যতম পাঞ্জাবে খলিস্থান আন্দোলন, দার্জিলিং – এ গোর্খাল্যান্ড স্থাপনের আন্দোলন, অসমে বোড়ো আন্দোলন,ইত্যাদি।

উগ্রবোধ ও সাম্প্রদায়িকতা এই সব বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের এক বড় কারণ।বিভিন্ন ধর্মের বিভিন্ন গোষ্ঠীর নানা রকম অভাব অভিযোগ থাকতেই পারে কিন্তু এই সব সমস্যার সমাধান নিজেদের দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে হতে পারেনা।তবুও এধরনের সশস্ত্র আন্দোলন হয়ে চলেছে যা দেশের জাতীয় সংহতিকে বিপন্ন করেছে।

বিচ্ছিন্নতা বোধ থেকে মুক্তির উপায়:

দেশের জাতীয় সংহতি রক্ষার্থে উগ্র বিচ্ছিন্নতাবাদী মনোভাব থেকে জাতিকে দূরে সরে থাকতে হবে।বিচ্ছিন্নতা বোধ থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় যেকোনো আন্দোলনের সূচনাতেই খুঁজতে হবে আন্দোলনের কারণ।

আর তার প্রতিকার করতে হবে সহানুভূতির সাথে।হটকারী সির্ধান্ত কখনও সমস্যা সমাধানের উপায় হতে পারেনা বরং হটকারিতা বিচ্ছিন্নতাবাদ – কে উৎসাহিত করে। রাজনৈতিক স্বার্থে হোক বা অন্য কোনো কারণে বিচ্ছিন্নতাবাদ স্বীকৃতি পেলে তার নিঃসন্দেহে মারত্মক হবে।

তাই জাতীয় সংহতি রক্ষার জন্যে দেশবাসীর মনে থাকতে হবে অখণ্ডতা বোধ।প্রত্যেক অঞ্চলের,প্রতিটি ধর্মের,প্রত্যেক গোষ্ঠীর মানুষের ভাষা,সংস্কৃতি,ধর্ম,সহ আর্থিক বিকাশের পথ পরিষ্কার থাকলে এধরনের বিচ্ছিন্নতা বোধ থেকে জাতি নিশ্চিত মুক্তি পাবে ও দেশের জাতীয় সংহতি থাকবে অক্ষুর্ণ।

উপসংহার:

অনেক প্রাণের বিনিময়ে,বহু বীর শহীদের রক্তে অর্জিত হয়েছে আমাদের দেশের স্বাধীনতা।তাই আমাদের সকলের কর্তব্য দেশের ঐক্য,অখণ্ডতা,সংহতি রক্ষা করা।আমাদের ঐক্য মূলক আদর্শে বিচ্ছিনতাকে স্থান না দিয়ে বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলায় দেশবাসীর কাছে কাম্য।বিচ্ছিন্নতা-কে দূরে সরিয়ে রেখে অখণ্ড দেশ ও জাতি গড়ে তোলার স্বপ্ন সার্থক করব আমরা।


“ভারতের জাতীয় সংহতি” রচনাটি আপনাদের কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।বানান ভুল বা অন্য কোনো তথ্য ভুল থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন।পরবর্তীতে এরকম আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ রচনা পওয়ার জন্য আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন।ধন্যবাদ।।

আর পড়ুন

গাছ আমাদের বন্ধু রচনা
বাংলার উৎসব রচনা
পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার রচনা
বই মেলা রচনা
Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন