বাংলার গ্রাম বা গ্রামের রূপ বৈচিত্র্য রচনা [PDF]

banglarachana.com এ আপনাকে স্বাগত জানাই।পঞ্চম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত বাংলা সিলেবাসের সমস্ত ব্যাকরণ গুরুত্বপূর্ণ রচনা,ভাবসম্প্রসারণ,চিঠি ইত্যাদি PDF সহকারে পাওয়ার জন্য আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন। নিয়মিত নতুন নতুন লেখা আপডেট করা হয় এখানে।নতুন নতুন লেখার আপডেট সবার আগে পাওয়ার জন্য নোটিফিকেশন পারমিশন দিন।আজকের নতুন উপস্থাপন – “বাংলার গ্রাম”/” গ্রামের রূপ বৈচিত্র্য” রচনা।

ভূমিকা:

“অবারিত মাঠ, গগনললাট চুমে তব পদধূলি
ছায়াসুনিবিড় শান্তির নীড় ছোটো ছোটো গ্রামগুলি”

আমাদের বাংলার এই ছোটো ছোটো গ্রামগুলির সঙ্গে আমরা সকলেই পরিচিত।গ্রামের আলোতে আমরা দুচোখ মেলেছি।বুক ভরে নিয়েছি দূষণমুক্ত বাতাস।মাঠে চাষের শস্য কণা,বাগানের ফলমূল মিটিয়েছে ক্ষুধার চাহিদা আর দেহের পুষ্টি।

এখানকার মাঠ ঘাট,গাছ গাছালি,জীবজন্তু,নদীনালা,পুকুর ও মানুষজনের সঙ্গে ঘটেছে হৃদয়ের গভীর যোগ।চারিদিকে আম,জাম,নারকেল,কাঁঠাল,সুপারির বনবীথি এ যেন আবহমান গ্রাম বাংলার একটি ছায়া ঢাকা শান্তির নীড়।গ্রাম আমাদের ‘ শিশুশয্যা, যৌবনের উপবন,বাধ্যকের বারাণসী।’

গ্রামের রূপ:

“চাষী ক্ষেতে চালাইছে হাল,
তাঁতি বসে তাঁত বোনে,জেলে ফেলে জাল-
বহুদূর প্রসারিত এদের বিচিত্র কর্মভার।
তারি পরে ভার দিয়ে চলিতেছে সমস্ত সংসার”

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

বাংলার গ্রামগুলোর এমনই রূপ।এই গ্রাম গুলিই হল আমাদের দেশের প্রানবিন্দু।ছায়া শীতল শান্ত পরিবেশে গ্রাম গুলির অবস্থান। হয় মাঠের প্রান্ত ছুঁয়ে কত গুলো বাড়ির ঘরের জটলা, অথবা জনপদের পা ছুঁয়ে দিগন্ত বিস্তৃত অবারিত সবুজ চাষের জমি।অনেক অনেক গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে চলেছে আঁকা বাঁকা নদী।

ছোটো ছোটো পুকুর, কোথাও পায়ে হাঁটা সরু পথের দুধারে বাঁশের ঝাড়,কোথাও আবার ঝুরি নামিয়ে গ্রামের সমস্ত ইতিহাসের সাক্ষী নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে প্রাচীন বট গাছ।ঘন ছায়াতে আম কাঁঠালের বাগান যেন রাখালের খেলাঘর। মুক্ত বাতাসে মনের আনন্দে পাখিদের ডাক।কোকিল ডাকে পঞ্চমে।চাতকের কাতর ধ্বনি,ঘুঘুর ক্লান্ত স্বর গ্রাম্য প্রকৃতির রূপকে দেয় এক নতুন বাহার।

ঋতু ভেদে রূপের পরিবর্তন:

ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে নতুন সাজে সজ্জিত হয় বাংলার গ্রাম গুলি।গ্রীষ্মের খরতাপে পুকুর, খাল নদীনালা শুকিয়ে যায়।দুর দুরন্ত পর্যন্ত শস্য শূন্য চাষের জমি।চারিদিকে শুষ্ক রুক্ষ ভাব।জনমানব শূন্য মাটির রাস্তা আর ঘুঘুর মন উদাস করা ডাক বাংলার গ্রামের এক পরিচিত চিত্র।বর্ষার আবির্ভাবে আকাশে ভেসে বেড়ায় সজল মেঘমালা।

এক নতুন জীবনের আশ্বাসে সবুজ সাজে সেজে ওঠে বাংলার প্রকৃতি। “অরুণ আলোর অঞ্জলি” নিয়ে হাজির হয় শরৎ। হেমন্তে শিশির আর হিমের পরশে মাঠের মঞ্জুরিত শস্যে ধরে সোনার রং। শীতের কুয়াশা ঢাকা সকাল আর উত্তুরে হিমেল হাওয়ায় জড়তার ভাব।” ফাগুনের আলোর সোনার কাঠিতে” বাংলার গ্রামের সকাল হয়।গাছের পাতা ঝরে,আবার নতুন পাতায় ফুলে ফলে ডাল গুলি নতুন ভাবে সেজে ওঠে।

উৎসব ও গ্রাম বাংলা:

বাংলার গ্রাম মানেই বারো মাসে তেরো পার্বণ।ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে পূজা, পার্বণ, উৎসব, মেলার নাড়ির যোগ।উৎসব অনুষ্ঠানে প্রকৃতি আর মানুষের যৌথ চেষ্টায় গ্রাম গুলির হয় রূপ সজ্জা।রঙিন আলোতে আলোকিত হয় চারদিক।উৎসবে মেতে ওঠে কঠোর পরিশ্রমী চাষী বন্ধুরা।বাড়ির আঙিনা আলপনায়,রঙিন ফুলে সাজিয়ে বনাঢ্য করে তোলে প্রত্যেক গ্রামবাসী।

উপসংহার:

দীর্ঘ দিনের অবহেলা আর বঞ্চনাকে কাটিয়ে অনেক গ্রামেই উন্নত হয়ে উঠেছে।আগের মত গ্রাম গুলিতে আর বিদ্যুৎ,শিক্ষা,পথঘাট,যানবাহনের অভাব নেই।শহরের সাথে পাল্লা দিয়ে গ্রাম গুলি উন্নত হয়েছে।তবুও এখনও বাংলার গ্রাম গুলিতে আছে সরলতা,শান্তি,বুক ভরে টেনে নেওয়ার মতো প্রানদ বাতাস।আর চোখ ভরে দেখার মতো সজল শ্যামলতা।


“বাংলার গ্রাম”/”গ্রামের রূপ বৈচিত্র্য” রচনাটি পড়ে আপনার কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।এরকম আরও নতুন নতুন লেখা পাওয়ার জন্য আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন।সম্পূর্ণ রচনাটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন