নিরক্ষরতা দূরীকরণ রচনা [With PDF]

banglarachana.com এ আপনাকে স্বাগত জানাই।নিয়মিত নতুন নতুন প্রবন্ধ রচনা আপডেট করা হয় এখানে।এখানে নেই এমন রচনা পাওয়ার জন্য রচনার নাম নীচে কমেন্ট করে আমাদের জানান। শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা কতটা সেটা আমরা সকলেই জানি।এই নিয়েই আজকের রচনা – ” নিরক্ষরতা দূরীকরণ”

ভূমিকা:

চোখ থাকতেও যারা অন্ধ,বিশাল জ্ঞানের রাজ্যের রসভোজ থেকে যারা বঞ্চিত,তাদের জীবন সত্যিই বড়ো দুঃখের।তারা নিজের নাম টুকুও স্বাক্ষর করতে পারেনা,সামান্য অক্ষর জ্ঞান টুকুও নেই।এই অক্ষর জ্ঞানহীন মানুষের দল সমাজে নিরক্ষর বলে গণ্য।

তাদের নিরক্ষরতার দায় শুধু তাদের একার নয়, এ দায় দেশ, জাতি ও সমগ্র মানবসমাজের।দেশের বিশাল সংখ্যক মানুষ যদি অশিক্ষার অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে থাকে তাহলে দ্রুত ঘনিয়ে আসবে সমাজ ও সংস্কৃতির বিদায় বেলা।তাই নিরক্ষরতা দূরীকরণে অংশ নেওয়া আমাদের সকলের কর্তব্য।

নিরক্ষরতা কারণ:

সাক্ষরতার দিক থেকে পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ দীর্ঘ সময়ের পরাধীনতা।শিক্ষার প্রতি বিদেশি শাসকদলের ছিল চরম অবহেলা।কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও কৃষি ও শিল্পের মতো শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয় নি।দারিদ্রতা শিক্ষার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সবদিন।

এছাড়াও নিরক্ষরতার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কারণ হল – সামাজিক কুসংস্কার, অনুন্নত সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষের শিক্ষার প্রতি অসচেতনতা ও অবহেলা,নারী শিক্ষার আবাধ সুযোগ সুবিধার অভাব,ইত্যাদি।বয়স্ক মানুষের নিরক্ষতা দূরীকরণের উদ্দেশ্যে সরকারি কিছু প্রচেষ্টা দেখা গেলেও তা বাস্তবে কোনোদিনই সেভাবে কার্যকরী হয়নি।

নিরক্ষরতা দূরীকরণে করণীয়:

দেশ থেকে নিরক্ষরতা দূরীকরণ করার জন্য দুভাবে ব্যাবস্থা নেওয়া যেতে পারে।এক,বালক বালিকাদের ১৪ বছর পর্যন্ত অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা যথাযথ ভাবে কার্যকরী করা।

দুই,সমাজের বয়স্ক নিরক্ষর মানুষদের সামান্য অক্ষর জ্ঞান টুকু দেওয়ার জন্য সঠিক পরিকল্পনা করে তাকে বাস্তবায়িত করা।কঠোর কর্মসূচি পালন করতে হবে যাতে বর্তমানের একটি শিশুও ভবিষ্যতে নিরক্ষর মানুষ না হয়ে ওঠে।সেই সাথে বয়স্কদের শিক্ষা দানের মধ্য দিয়ে নিরক্ষরতার হার দ্রুত কমানো।

ছাত্র সমাজের ভূমিকা:

বর্তমান ছাত্রছাত্রীরাই দেশের ভবিষ্যতের নাগরিক।তাই দেশের ও সমাজের কল্যাণে তাদের গুরুত্বও যথেষ্ট।যুগে যুগে ছাত্রসমাজ দেশের মানুষের জন্য অনেক কর্তব্য পালন করে এসেছে।স্কুলে কলেজে পড়াশোনার পাশাপাশি সমাজ কল্যাণে নিরক্ষরতা দূরীকরণে ছাত্র সমাজের করণীয় অনেক কিছুই রয়েছে।

লেখাপড়ার অবকাশে গ্রামে, শহরে, শহরতলিতে পরিকল্পনা অনুযায়ী ছড়িয়ে ছিটিয়ে নিরক্ষর মানুষদের শিক্ষিত করার,নিরক্ষর অভিভাবকদের শিক্ষার প্রতি সচেতন করার পূর্নব্রতে আত্মনিয়োগ করতেই পারে ছাত্রসমাজ।বিভিন্ন সমাজসেবী সংগঠন সমাজ থেকে নিরক্ষরতার অন্ধকারকে দুর করতে নানান কর্মসূচি পালন করে থাকে।

এই সমস্ত সংগঠনের সাথে আমাদের দেশের অনেক ছাত্র ছাত্রীরা যুক্ত।বিদ্যালয়ের সমস্ত ছাত্র ছাত্রীরা যদি তাদের বাড়ির অশিক্ষিত সদস্য বা পাড়া প্রতিবেশী যারা অশিক্ষিত ,তাদের শিক্ষা দানের জন্য সচেষ্ট হয় তাহলে খুব জলদি দেশ থেকে নিরক্ষরতা দূরীকরণ করা সম্ভব হবে।

উপসংহার:

একটি গণতান্ত্রিক দেশের মানুষের মধ্যে নিম্নতম অক্ষর জ্ঞান টুকু না থাকলে দেশের গণতন্ত্র নিঃসন্দেহে অর্থহীন।নিজের নাম টুকু স্বাক্ষর করার অক্ষমতার দরুন বুড়ো আঙুলের ছাপ দিয়ে পরিচিতি প্রকাশের লজ্জা কেমন সেই নিরক্ষর মানুষটির নয়, এ লজ্জা সমগ্র সমাজের।এই লজ্জা ও অপমানের থেকে জাতি মুক্তি না পেলে তার পরিত্রাণ নেই।


আজকের উপস্থাপন – “নিরক্ষরতা দূরীকরণ” রচনাটি পড়ে আপনার কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানান।পরবর্তীতে এরকম আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ রচনা পাওয়ার জন্য আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন।এখানে নেই এমন রচনা পাওয়ার জন্য রচনার নাম কমেন্ট করে জানাবেন।ধন্যবাদ।

Print Friendly, PDF & Email

“নিরক্ষরতা দূরীকরণ রচনা [With PDF]”-এ 2-টি মন্তব্য

Rakesh Routh শীর্ষক প্রকাশনায় মন্তব্য করুন জবাব বাতিল