বিশ্ব উষ্ণায়ন প্রবন্ধ রচনা [PDF]

যান্ত্রিক সভ্যতায় আমরা দিনদিন উন্নত হচ্ছি ঠিকই কিন্তু সেই সাথে পাল্লা দিয়ে পরিবেশকে অসুস্থ করে তুলছি।প্রকৃতিকে সুস্থ করে তুলতে আমাদের সকলেরই সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে।তারই ভিত্তিতে আজকের বিষয় বিশ্ব উষ্ণায়ন প্রবন্ধ রচনা

বিশ্ব উষ্ণায়ন প্রবন্ধ রচনা বৈশিষ্ট্য চিত্র

ভূমিকা:

আমাদের পৃথিবী সময়ের সাথে সাথে যত আধুনিক হচ্ছে সেই আধুনিকতার সঙ্গে উদ্ভাবিত হচ্ছে নিত্য নতুন উত্তরাধুনিক সব সমস্যা। সেই সকল সমস্যাগুলির মধ্যে বেশকিছু এমনই গুরুতর যে সেগুলি সমগ্র পৃথিবীর ভবিষ্যৎ কী বহু ক্ষেত্রে প্রশ্নচিহ্নের মুখে ফেলে দিচ্ছে। সভ্যতার আধুনিকীকরণ করতে গিয়ে মানুষ সভ্যতার অস্তিত্বকে ফেলে দিচ্ছে সংকটের মুখে।

বর্তমানকালের ভোগবিলাস মূলক জীবন-যাপনের যুগে মানুষের লালসা মূলক কৃতকর্মের ফলে এমন কিছু অমঙ্গলজনক আভাসের উদ্রেক ঘটেছে যা পৃথিবীর সকল বৈজ্ঞানিক তথা শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের কাছে সমগ্র চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আধুনিক পৃথিবীতে এই ধরনের সকল সমস্যাগুলির মধ্যে যেটি সবথেকে ভয়ঙ্কর এবং গুরুত্বপূর্ণ তা হল বিশ্ব উষ্ণায়ন বা গ্লোবাল ওয়ার্মিং এবং তার ফলে শুরু হওয়া জলবায়ুর অস্বাভাবিক তথা ব্যাপক পরিবর্তন।

বিশ্ব উষ্ণায়ন কি?

বিজ্ঞানীদের ভাষায় সাধারণভাবে বলতে গেলে বিশ্ব উষ্ণায়ন পৃথিবীর ক্ষেত্রে একটি অতি সাধারন জলবায়ু পরিবর্তনের ঘটনা। এই বিশ্ব উষ্ণায়নের চক্র একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়। সেই সময় পৃথিবীর উষ্ণতা স্বাভাবিকভাবেই কিছু মহাজাগতিক কারণের প্রভাবে খানিকটা বেড়ে যায়। আবার সময়ের সাথে সাথে জলবায়ু ও স্বাভাবিক পরিবর্তনের মাধ্যমে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলীয় পরিস্থিতি নিজে থেকেই বদলে যায়।

কিন্তু বর্তমান কালে যে বিশ্ব উষ্ণায়নে এত আলোচনা হয়ে থাকে তা কোন স্বাভাবিক জাগতিক ভৌগোলিক প্রক্রিয়া নয়। এটি হলো পৃথিবীর উপর মানুষের যথেচ্ছাচারের ফলে সমগ্র পৃথিবীর জল স্থল এবং সামগ্রিক বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা বৃদ্ধির ঘটনা। স্বাভাবিক ভৌগোলিক বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রক্রিয়াটি সময় বা কারণ নিরপেক্ষ হলেও এক্ষেত্রে তেমনটি একেবারেই নয়।

ইউএনএফসিসিসি-র দেওয়া বিবরণ অনুসারে বর্তমানকালের বহুচর্চিত বিশ্ব উষ্ণায়নের সংজ্ঞাটি হলো মনুষ্যসৃষ্ট কারণে পৃথিবীর গড় উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে উদ্ভূত জলবায়ুর অস্বাভাবিক পরিবর্তন। এই অস্বাভাবিক পরিবর্তনকেই নানা গুরুত্বপূর্ণ কারণে পরিবেশ বিজ্ঞানীরা আধুনিক পৃথিবীর মুখ্য সমস্যা রূপে চিহ্নিত করেছেন।

ইতিহাসে বিশ্ব উষ্ণায়ন:

ইতিহাসে বিশ্ব উষ্ণায়নের নথিভূক্ত প্রামাণ্য দলিলের খোঁজ করতে গেলে আমাদের পিছিয়ে যেতে হবে মধ্য যুগে। মধ্যযুগের শুরুর দিকে অর্থাৎ প্রায় ৯৫০ থেকে ১২৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ইউরোপ থেকে শুরু করে চিন দেশ অব্দি একটি স্বাভাবিক বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। আধুনিক গবেষণা থেকে প্রাপ্ত ফলাফলের উপর ভিত্তি করে মনে করা হয় যে এই উষ্ণায়নের ঘটনাটি সমগ্র পৃথিবী ব্যাপী হয়নি বরং তা একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।

আধুনিক পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে 950 খ্রিস্টাব্দে থেকে হঠাৎ করে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের গড় তাপমাত্রা বেড়ে যেতে থাকে। এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির সম্ভাব্য কারণ হিসেবে গবেষকরা চিহ্নিত করেছেন সূর্যের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া আগ্নেয়গিরি সক্রিয়তা কমে আসা এবং সমুদ্রের গতিপ্রবাহের পরিবর্তনের মতন জাগতিক ভৌগলিক প্রক্রিয়াগুলিকে।

তবে বর্তমান ভূতাত্ত্বিক গবেষণায় দেখা গেছে মধ্যযুগের আগেও পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে স্বাভাবিক বিশ্ব উষ্ণায়ন ঘটেছে। পৃথিবীর সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে শুরু করে সমুদ্রগর্ভ সব জায়গার তাপমাত্রা সময়ের সাথে সাথে বেড়েছে বা কমেছে। তবে এই সকল বিশ্ব উষ্ণায়নের ঘটনাগুলি আধুনিক যুগের বিশ্ব উষ্ণায়নের সাথে সমার্থক নয়।

কারণ প্রাচীন ও মধ্যযুগের বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে জলবায়ুগত পরিবর্তনের পরিস্থিতি বিভিন্ন জাগতিক ও মহাজাগতিক কারণে উদ্ভূত হবার ফলে সেগুলি স্বাভাবিক বিশ্ব উষ্ণায়ন হিসেবে বিবেচিত হয়। এজন্যে তা পৃথিবীর অস্তিত্বের পক্ষে কখনই সংকটজনক ছিল না।

আধুনিক পরিস্থিতি:

আধুনিক বিশ্ব উষ্ণায়নের পরিস্থিতি ইতিহাসে উদ্ভূত স্বাভাবিক বিশ্ব উষ্ণায়নের পরিস্থিতি তুলনায় সম্পূর্ণরূপে আলাদা। আধুনিক যন্ত্র দ্বারা নথিভুক্ত তাপমাত্রা দলিল অনুযায়ী ১৮৬০ সাল থেকে হাজার ১৯০০ সালের মধ্যে পৃথিবীর ভূভাগ এবং সমুদ্র জলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছিল ১.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ০.৭৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেইখানে ১৯৭৯ সাল থেকে প্রতি দশকে এই তাপমাত্রা ০.১৪ থেকে ০.২২ ডিগ্রী সেলসিয়াস হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিজ্ঞানীদের মতে ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দ অব্দি পৃথিবীর তাপমাত্রা নির্দিষ্ট সুসাম্য বজায় ছিল। তারপর থেকেই সময় যত এগিয়েছে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার ততই বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা ২০০৫ সালকে পৃথিবীর সবচেয়ে উষ্ণতম বছর হিসেবে চিহ্নিত করেছে। উদ্ভূত এই পরিস্থিতির সুদুরপ্রসারি ফলাফলের কথা চিন্তা করে সেই বিংশ শতাব্দীর সূচনাকাল থেকেই পরিবেশ বিজ্ঞানীরা অনতিবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বারবার বলে আসছেন।

উষ্ণায়নের কারণ:

বর্তমানকালে উদ্ভূত বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণ চিহ্নিত করতে গেলে কোন একটি বিষয়ের ওপর দোষারোপ করা যায় না। শিল্প বিপ্লবের পরবর্তী সময় থেকেই পৃথিবীর বুকে যন্ত্রপাতি ও কলকারখানার যে ঢক্কানিনাদ সুইটি পৃথিবীর বুকে আধুনিক অস্বাভাবিক বিশ্ব উষ্ণায়নের আদিমতম কারণ। তাছাড়া মানুষের ভোগের ব্যাপক বাসনা এবং লোভের বশবর্তী হয়ে মানুষ ব্যাপকভাবে সমগ্র বিশ্বজুড়ে অরণ্য ধ্বংস লিপ্ত হয়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই পৃথিবীর শ্বাসযন্ত্র পড়েছে সংকটের মুখে এবং যার অনিবার্য ফল হিসেবে এসেছে বিশ্ব উষ্ণায়ন এর মতন সংকট। 

বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রক্রিয়া:

বৈজ্ঞানিকভাবে ব্যাখ্যা করতে গেলে বিশ্ব উষ্ণায়নের মূল কারণ হলো আধুনিক গবেষণাগার এবং কারখানাগুলি থেকে নির্গত কার্বন-ডাই-অক্সাইড, কার্বন-মনো-অক্সাইড, সালফার-ডাই-অক্সাইড-এর মতন অসংখ্য ক্ষতিকারক গ্যাসসমূহ।

একদিকে যেমন পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠে এই সকল গ্যাসগুলিকে শোষণ করে নিজে উত্তপ্ত হয়, অন্যদিকে তেমনি এই সমস্ত গ্রীন হাউস গ্যাসগুলি বায়ুমন্ডলে মেশার ফলে সূর্য থেকে পৃথিবীতে আগত রশ্মি বিকিরিত হয়ে বায়ুমণ্ডল থেকে মহাশূন্যে নির্গত না হতে পেরে পৃথিবীর মধ্যেই থেকে যায় এবং পৃথিবীকে উভয় দিক থেকে উষ্ণ করে তোলে।

এই প্রক্রিয়াকে এক কথায় বলা হয় গ্রীন হাউজ এফেক্ট। অন্যদিকে এই সমস্ত ক্ষতিকারক গ্যাস গুলি বায়ুমন্ডলে নেশার ঘরে বায়ুমন্ডলে থাকা অতি প্রয়োজনীয় ওজোন স্তর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 

বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলাফল:

বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলাফল সম্পর্কে নাতিদীর্ঘ একটি আলোচনা করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। কারণ এর ফলাফল এতই বিস্তৃত ও ব্যাপক যে তাকে প্রতিবেদনের একটি অংশে লিপিবদ্ধ করা প্রায় অসম্ভব। বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রত্যক্ষ এবং ভয়ঙ্কর ফলরূপে যা উল্লেখ করা যেতে পারে তা হল সমুদ্রের জলস্তরে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি।

প্রকৃতপক্ষে পৃথিবীজুড়ে তাপমাত্রা একটু একটু করে অস্বাভাবিক মাত্রায় বেড়ে চলার কারণে পৃথিবীর দুই মেরুতে অবস্থিত বিপুল পরিমাণ বরফ একটু একটু করে গলে যেতে শুরু করেছে। বরফের এই অস্বাভাবিক গলনের ফলে ফলে সমুদ্রের জলস্তরও একটু একটু করে ঊর্ধ্বগামী হচ্ছে।

অন্যদিকে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে বিভিন্ন যে ক্ষতিকারক গ্রিনহাউস গ্যাসগুলি বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে, সেগুলি একইসাথে ওজোন স্তরের ব্যাপক ক্ষতি করার কারণে পৃথিবীর প্রাণ ধারণের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ওজোন গভীর স্তরে ক্ষত সৃষ্টি হচ্ছে। এসকল প্রবণতা পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্বকেই ফেলে দিচ্ছে সংকটের মুখে।

ব্যাপক ক্ষতিকর প্রভাব:

বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে পৃথিবীজুড়ে স্বাভাবিক উষ্ণতার যে ব্যাপক তারতম্য দেখা দিচ্ছে, এবং তার ফলাফল হিসেবে যে সমস্ত অন্যান্য ভয়াবহ সমস্যাগুলি সামনে আসছে তার প্রভাব আরো ব্যাপক এবং সুদুরপ্রসারী। যেমন বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় অধিক মাত্রায় বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র প্রাণী ও প্রয়োজনীয় ব্যাকটেরিয়া পৃথিবী থেকে লুপ্ত হয়ে যেতে চলেছে।

অন্যদিকে সমুদ্রের জল স্তর সময়ের সাথে সাথে ক্রমাগত বাড়তে থাকার কারণে সমুদ্র ও নদী তীরবর্তী বিভিন্ন অঞ্চল তলিয়ে যেতে বসেছে। এছাড়া গ্রীন হাউস গ্যাসগুলি দ্বারা তৈরি  ওজোন স্তরে তৈরি হওয়া ক্ষতে বা ওজোন হোলের মাধ্যমে অত্যন্ত ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি পৃথিবীতে প্রবেশ করার ফলে স্কিন ক্যানসারের মতো মারণ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। সর্বোপরি পৃথিবীর সামগ্রিক জলবায়ুতে আসছে এক বিরাট পরিবর্তন, যা বিশ্বকে ঠেলে দিচ্ছে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পথে। 

সমাধানের উপায়:

এই ভয়ঙ্কর সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজে বার না করতে পারলে অস্তিত্ব সংকট থেকে পৃথিবীর উদ্ধার সম্ভব নয়। এইভাবে একই হারে বিশ্ব উষ্ণায়ন চলতে থাকলে পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব নির্মূল হয়ে যাওয়া সময়ের অপেক্ষা ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই সেজন্য একযোগে আমাদের বিশ্ব উষ্ণায়ন থেকে প্রতিকারের উপায়ের অনুসন্ধান করতে হবে। পরিবেশ বিজ্ঞানীরা এই জ্বলন্ত সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য বেশ কয়েকটি উপায়ের কথা উল্লেখ করেছেন। 

  • বিশ্ব উষ্ণায়নকে পরাজিত করার জন্য সর্বপ্রথম গ্রিনহাউস গ্যাস সৃষ্টি এবং তার নির্গমন যথাসম্ভব নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। 
  • এক্ষেত্রে সর্বপ্রথম মানুষকে নিজেদের জীবনচর্যার ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। 
  • গাড়ি, কারখানা ধোঁয়া ইত্যাদির ব্যবহার যথাসম্ভব কমিয়ে ফেলতে হবে বা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
  • ক্লোরো-ফ্লুরো-কার্বন এর মতন ক্ষতিকারক বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হয় এমন যন্ত্রপাতির ব্যবহার যথাসম্ভব কমিয়ে ফেলতে হবে।
  • জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
  • শক্তির অপ্রচলিত উৎসগুলি ব্যবহারের দিকে অধিক গুরুত্ব আরোপ করতে হবে।
  • সর্বোপরি ব্যাপক পরিমাণে বনসৃজন করতে হবে। 

উদ্যোগসমূহ:

পৃথিবীজুড়ে বিশ্ব উষ্ণায়নকে পরাস্ত করার উদ্দেশ্যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বর্তমানকালে বিভিন্ন সংগঠন গঠিত হয়েছে। বিভিন্ন অলাভজনক সংস্থা, সরকারি তথা কর্পোরেট বিভিন্ন সংগঠন এক্ষেত্রে নিরন্তর কাজ করে চলেছে। এইসকল সংস্থাগুলি বনসৃজন করা, আঞ্চলিক স্তরে মানুষকে সচেতন করা, দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা ইত্যাদি জনকল্যাণমূলক কাজ গুলি করে থাকে।

আন্তর্জাতিক স্তরে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ বিশ্ব উষ্ণায়নকে একটি আন্তর্জাতিক সংকট হিসেবে ঘোষণা করে সর্বস্তরে এর মোকাবিলা ডাক দিয়েছে। স্থানীয় স্তরেও মানুষকে বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতন করে তোলার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন শুভ উদ্যোগ গৃহীত হচ্ছে।

উপসংহার:

বিশ্ব উষ্ণায়ন বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সমস্যা এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। এই সমস্যা স্থান-কাল-পাত্র, দেশ, মহাদেশ নির্বিশেষে সকলের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জের মুখে এনে আজ দাঁড় করিয়েছে। তাই আজ এই সমস্যার প্রকৃত গুরুত্ব অনুধাবন করে নিজেদের সর্বশক্তি দিয়ে এর মোকাবিলার উদ্দেশ্যে ঝাঁপিয়ে না পড়লে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কতদিন পৃথিবীর আলো দেখতে পাবে সে বিষয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।

তবে আশার কথা এই যে, সময়ের সাথে সাথে বিশ্ব উষ্ণায়ন এর ব্যাপারে সর্বস্তরের সচেতনতা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনি গ্রীন হাউজ গ্যাসের ব্যাপক নির্গমনও একটু একটু করে কমে আসতে শুরু করেছে। ফলে ওজোন স্তরে তৈরি হওয়া ক্ষতও ধীরে ধীরে নিরাময় হয়ে উঠছে। তাই আমরা একদিন পৃথিবীর সম্পূর্ণ স্বাভাবিক জলবায়ুতে সুস্থ পরিবেশে নিঃশ্বাস নিতে পারব- এই আশাকে সঙ্গী করে বিশ্ব উষ্ণায়নকে পরাহত করবার দৃঢ় প্রত্যয়ে ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যাওয়াই একান্ত বাঞ্ছনীয়।


বিশ্ব উষ্ণায়ন প্রবন্ধ রচনাটি পড়ে আপনার কেমন লাগলো কমেন্ট করে জানাবেন।আপনার একটি কমেন্ট আমাদের অনেক উৎসাহিত করে আরও ভালো ভালো লেখা আপনাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ায় জন্য।বানান ভুল থাকলে কমেন্ট করে জানিয়ে ঠিক করে দেওয়ার সুযোগ করে দিন। সম্পূর্ণ রচনাটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন