প্রাত্যহিক জীবনে জল প্রবন্ধ রচনা [PDF]

শুধু মানবজাতি নয়, বেঁচে থাকার জন্য সমস্ত প্রাণীজগতে জল একান্ত প্রয়োজন।তাই জলের অপর নাম জীবন।কিন্তু আমরা জলকে দিনের পর দিন দূষণ করে চলেছি। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজকের বিষয় – প্রাত্যহিক জীবনে জল প্রবন্ধ রচনা।

প্রাত্যহিক জীবনে জল প্রবন্ধ রচনা বৈশিষ্ট্য চিত্র

ভূমিকা:

পৃথিবীতে মানুষের জীবনধারণের জন্য যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আবশ্যিক উপাদান বর্তমান তার মধ্যে অন্যতম প্রধান হলো জল। ছেলেবেলা থেকে শুনে আসা অতি প্রচলিত “জলের অপর নাম জীবন”- প্রবাদটি মোটেই অতিশয়োক্তি নয়। পৃথিবীতে মানুষের বেঁচে থাকা, সভ্যতার উন্নতি সবকিছুর জন্যই জলের একান্ত প্রয়োজন আছে।

জল ছাড়া জগতে মানুষ কেন, কোন প্রাণীর অস্তিত্বই কল্পনা করা কঠিন। আমাদের প্রতি দিনকার জীবনে প্রত্যেক মুহূর্তে আমরা জলের ওপর নির্ভর করেই বেঁচে থাকি। প্রাণী তথা উদ্ভিদজগতের অস্তিত্ব রক্ষার মূল ভৌত উপাদানই হলো জল। তাছাড়া মানবজাতির খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান- এর কোনটির অস্তিত্বই জল ছাড়া সম্ভব নয়।

তাই মানুষের জীবনে জলের অপরিসীম গুরুত্বকে মাথায় রেখে জল ব্যবহারের ব্যাপারে সচেতনতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। তা না হলে অদূর ভবিষ্যতে জল সংকট দেখা দিলে সেই সংকট সভ্যতার অস্তিত্বের সংকটে পরিণত হতে বেশি সময় লাগবে না। সে কারণেই প্রাত্যহিক জীবনে জলের স্থান সংক্রান্ত সংক্ষিপ্ত আলোচনার উদ্দেশ্যে নিম্নের এই উপস্থাপনা।

জলের গুরুত্ব:

পৃথিবীতে আদিমতম প্রাণের সৃষ্টি হয়েছিল যে উপাদানের মধ্যে তা হল জল। সমগ্র পৃথিবীর চার ভাগের তিন ভাগ অংশই জল দ্বারা আবৃত। এই উপস্থাপনার সূচনালগ্নেই উল্লেখ করা হয়েছে পৃথিবীতে সমগ্র প্রাণিজগতের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য জলের প্রয়োজনীয়তা ঠিক কতটা।

একদিকে উদ্ভিদ যেমন মূলত জলকে আশ্রয় করেই পৃথিবীতে বেঁচে থাকে, অন্যদিকে তেমন মানুষও দৈনন্দিন জীবনের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিষয়ে জলের ওপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভরশীল। তাছাড়া মজার কথা এই যে পৃথিবীতে সমগ্র জীবজগতের শরীরের গঠনগত প্রধান উপাদানই হলো জল। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির শরীরের ৬০ শতাংশই হলো জল দ্বারা তৈরি। 

জলের শ্রেণীবিভাগ:

পৃথিবীতে জল প্রাণের অস্তিত্ব রক্ষার গুরুত্বের দিক থেকে অভিন্ন হলেও সব ধরনের জলই মানুষের ব্যবহারযোগ্য নয়। সেজন্যে আলোচনার সুবিধার্থে পৃথিবীতে স্থিত জলকে বৈশিষ্ট্যগত এবং ব্যবহারগতদিক থেকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে আলোচনা করা হলো। 

বৈশিষ্ট্যগত দিক থেকে পৃথিবীতে জল দুই প্রকার। লবণাক্ত জল এবং স্বাদু বা মিষ্টি জল। লবণাক্ত জল বলতে মূলত সমুদ্রের জলকে বোঝানো হয়ে থাকে। এই জল বৈশিষ্ট্যগতভাবে ক্ষারযুক্ত এবং লবণাক্ত হওয়ার কারণে সাধারণভাবে মানুষ একে ব্যবহার করতে পারে না। মানুষের ব্যবহারযোগ্য জল বলতে মূলত বোঝানো হয় স্বাদু বা মিষ্টি জলকে।

প্রাত্যহিক জীবনে মানুষের ব্যবহারযোগ্য এই স্বাদু বা মিষ্টি জলকে উৎসগত দিক থেকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা: পৃথিবীর উপরিভাগে মুক্ত জল এবং ভূগর্ভে আবদ্ধ জল। পৃথিবীর উপরিভাগের মুক্ত জল প্রধানত খাল-বিল, পুকুর, হ্রদ, নদী থেকে পাওয়া গিয়ে থাকে। অন্যদিকে ভূগর্ভস্থ জল বা ভৌম জল মাটির তলায় আবদ্ধ অবস্থায় থাকে। এই দুই প্রকার জলকেই মানুষ বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে তার প্রাত্যহিক জীবনে ব্যবহার করে থাকে। 

প্রাত্যহিক জীবনে জলের বিভিন্ন ব্যবহার:

মানুষ তার দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কোন না কোনভাবে জল ব্যবহার করে থাকে। প্রাত্যহিক জীবনে জলের সেই সকল বহুমুখী ব্যবহারগুলি নিম্নে আলোচনা করা হল। 

  • প্রধান পানীয়: 

পৃথিবীতে সকল তরল পদার্থের মূল গঠনগত উপাদান হলো জল। একজন মানুষ জল না পান করে গড়ে মাত্র তিন দিন বেঁচে থাকতে পারে। অর্থাৎ খাবার ছাড়া বেশ কিছুদিন বেঁচে থাকা সম্ভব হলেও, জল ছাড়া বেঁচে থাকা এক কথায় অসম্ভব। এই উক্তি মানুষ ব্যতীত কয়েকটি বিশেষ প্রাণী ছাড়া অন্যান্য সকল প্রাণীদের জন্যই সমানভাবে প্রযোজ্য। মানুষের সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন অন্তত পক্ষে দুই লিটার জল পানের প্রয়োজন হয়। 

  • গৃহস্থালীতে জলের ব্যবহার:

মানুষের গৃহস্থালীতে জলের সবচেয়ে বহুমুখী ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। গৃহস্থালির সকল কাজে কোন না কোনভাবে জল প্রয়োজন হয়। রান্নাবান্না থেকে শুরু করে, কাপড় কাচা, স্নান করাইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে মানুষ ব্যাপক পরিমাণে জলের ব্যবহার করে থাকে। ব্যবহারগত দিক থেকে পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে মানুষ তার মোট ব্যবহৃত জলের ৩.৫% গৃহস্থালির কাজে ব্যয় করে। 

  • কৃষিক্ষেত্রে জলের ব্যবহার:

পৃথিবীতে জলের সবচেয়ে বেশি ব্যবহার লক্ষ্য করা যায় কৃষিক্ষেত্রে। মানুষ তার মোট ব্যবহৃত জলের প্রায় ৭৩ শতাংশ কৃষি ক্ষেত্রে ব্যয় করে থাকে। পৃথিবীর কয়েকটি উন্নত দেশে এর পরিমাণ প্রায় ৯০ শতাংশ। কৃষিক্ষেত্রে সেচ, ফসল ধোয়া, বাছা ইত্যাদি কাজে জল ব্যবহার করা হয়।

  • শিল্পক্ষেত্রে জলের ব্যবহার:

দৈনন্দিন ব্যবহার্য জলের একটা বড় অংশ শিল্পক্ষেত্রে ব্যয় করা হয়ে থাকে। সভ্যতার অগ্রগতির মূল বাহক কল-কারখানা গুলিতে প্রত্যেক দিন প্রচুর পরিমাণে জল ব্যবহৃত হয়। পৃথিবীতে এর পরিমাণ মোট ব্যবহৃত জলের প্রায় ৩.২ শতাংশ। 

  • শক্তি উৎপাদনে জলের ব্যবহার:

পৃথিবী সভ্যতার চালিকাশক্তি হল বিভিন্ন প্রকার শক্তি। এই বিভিন্ন প্রকার শক্তি উৎপাদনে পৃথিবীর মোট ব্যবহার্য জলের প্রায় ১৩.৭ শতাংশ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাপবিদ্যুৎ জলবিদ্যুৎ তথা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলিতে প্রতিদিন শক্তি উৎপাদনের জন্য বিপুল পরিমান জল প্রয়োজন হয়।

ভারতীয় সংস্কৃতিতে জলের স্থান:

মানব জীবনে জলের এই অপরিসীম গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে প্রাচীন ভারতীয় সংস্কৃতিতে জলকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় সংস্কৃতি অনুসারে জল ভারতীয়দের অনেকগুলি আরাধ্য দেবতাদের মধ্যে একটি। বৈদিক দেবতা বরুণের উপাসনার মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে জলকেই উপাসনা করা হয়।

তাছাড়া জলের মূল উৎস রূপে অবস্থিত ভারতবর্ষের প্রধান নদী গুলিকে ভারতীয় সংস্কৃতিতে বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সিন্ধু, গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র কিংবা অধুনালুপ্ত সরস্বতী নদীর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তাছাড়া প্রাচীন ভারতীয় সংস্কৃতিতে বিভিন্ন যজ্ঞের মাধ্যমেও অগ্নির সাথে সাথে জলকে সম্মান জানানো হয়ে থাকে। 

জল অপচয়:

পৃথিবীর মূল গঠনগত উপাদান জন হলেও মানুষের ব্যবহারযোগ্য জলের মাত্রা পৃথিবীতে অফুরন্ত নয়। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মহলের বিজ্ঞানীরা মানুষের ব্যবহারযোগ্য জলের উৎস নিঃশেষিত হওয়ার ব্যাপারে সাবধান বাণী শুনিয়েছেন। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে মানুষের ব্যবহারযোগ্য জলের পরিমাণ একটু একটু করে ফুরিয়ে আসতে শুরু করেছে। তাই আমাদের সকলকে অনতিবিলম্বে জলের অপচয় সম্পর্কে বিশেষ ভাবে সচেতন হতে হবে।

মনে রাখতে হবে জল হল পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। প্রয়োজন ছাড়া যথেষ্ট পরিমাণে জলের অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে। বাড়ি কিংবা রাস্তাঘাটে অযথা পানীয় জলের কল খুলে রাখা যাবে না। কৃষিক্ষেত্রে ডিপ টিউবওয়েলের ব্যবহারকে যথাসম্ভব নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এইভাবে পৃথিবীজুড়ে জলের ব্যাপক অপচয় বন্ধ না করলে তা মানবজাতিকে সমূহ বিপদের মুখে ঠেলে দিতে পারে।

জল দূষণ:

বর্তমান বিশ্বে জল সংক্রান্তঃ অপর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হলো বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান জল দূষণের মাত্রা। বিশ্বে জলের বিভিন্ন উৎস বিশেষভাবে দূষিত হওয়ার ফলে ইতিমধ্যেই পরিবেশ বিজ্ঞানীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।

পৃথিবীতে জল দূষণের অন্যতম প্রধান কয়েকটি কারণ হলো, কলকারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ জলের বিভিন্ন উৎসে গিয়ে মেশা, শক্তিকেন্দ্র গুলি থেকে নির্গত বর্জ্য জল বিশুদ্ধ জলের উৎসে গিয়ে পড়া, কৃষিক্ষেত্রে অতিরিক্ত মাত্রায় কীটনাশক এবং রাসায়নিক সারের ব্যবহার তথা মানুষের দৈনন্দিন জীবনে রাসায়নিক দ্রব্যের ক্রমবর্ধমান ব্যবহার ইত্যাদি। জল দূষণের পরিণতি জলের অপচয়ের থেকেও মারাত্মক।

দৈনন্দিন জীবনে দূষিত জল ব্যবহার করলে জল বাহিত বিভিন্ন রোগ মানুষকে আক্রমণ করতে পারে। ইতিমধ্যেই পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে জল দূষণের ফলে দেখা গিয়েছে বিভিন্ন মারণ রোগের প্রাদূর্ভাব। এই সকল রোগ দূষিত জলের মাধ্যমে ব্যাপক মাত্রায় ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ন্ত্রণ করাও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। 

জল সংকট:

বর্তমান যুগে বিশ্বজুড়ে জলের ব্যাপক অপচয় এবং দূষণের ফলে পৃথিবীর নানা স্থানে ব্যবহারযোগ্য জলের সংকটের মতন নানা সমস্যা। ইতিমধ্যেই আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে ব্যবহার্য জলের তীব্র সংকট দেখা দেওয়ার কারনে সেই সব দেশের সরকারের তরফে স্বাদু জলের ব্যবহারকে বিশেষ মাত্রায় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা ভারতবর্ষের তামিলনাড়ু রাজ্যের চেন্নাইয়ের জল সংকটের কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বিজ্ঞানীদের মতে এই জল সংকটের জন্য দূষণ এবং অপচয় ছাড়াও দায়ী হলো ব্যাপকহারে নগরায়ন এবং কংক্রিটাইজেশন। 

জলের সংরক্ষণ:

পৃথিবীতে জীবন তথা সভ্যতার অস্তিত্ব রক্ষার জন্য অনতিবিলম্বে জল সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। জলের দূষণ এবং অপচয়কে যথাসম্ভব নিয়ন্ত্রণ করে বিভিন্ন পদ্ধতিতে স্বাদু জলের সংরক্ষনই আসন্ন জল সংকট থেকে বাঁচবার একমাত্র উপায়। এই উদ্দেশ্যে পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে সরকারি-বেসরকারি তথা ব্যক্তিগত উদ্যোগে জল সংরক্ষণের বিভিন্ন ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের সরকারের তরফে গৃহীত ‘জল ধরো জল ভরো’ প্রকল্প, চেন্নাইয়ের পৌরনিগমের তরফে গৃহীত প্রতিটি বাড়ির ছাদ তথা বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টির জল সংরক্ষণ প্রকল্প বিশেষ উল্লেখযোগ্য। তাছাড়া পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিনকার ব্যবহৃত গৃহস্থালির বর্জ্য জলকে বিশেষ পদ্ধতিতে পাইপের মাধ্যমে ভূগর্ভে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগগুলির কথাও উল্লেখ করতে হয়।

উপসংহার:

আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে জল ব্যবহারের সময় মনে রাখতে হবে জল হলো পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভৌত সম্পদ। এই জলের ওপর নির্ভর করেই পৃথিবীতে প্রাণের সঞ্চার ঘটে, মানব সভ্যতা সমৃদ্ধি লাভ করে। তাই নিয়মিত মাত্রায় যথাযথ প্রয়োজন অনুসারে জলের ব্যবহার এবং যথাসম্ভব সংরক্ষণই আমাদের জীবনের পরম কর্তব্য হওয়া উচিত। জল এবং জীবন এই দুটিকে সমার্থক রূপে বিবেচনা করে এই পরম গুরুত্বপূর্ণ সম্পদটির প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন এর মাধ্যমেই একটি সুন্দর বিশ্ব গড়ে তোলা সম্ভব।


প্রাত্যহিক জীবনে জল প্রবন্ধ রচনাটি পড়ে আপনার কেমন লাগলো কমেন্ট করে জানাবেন।আপনার একটি কমেন্ট আমাদের অনেক উৎসাহিত করে আরও ভালো ভালো লেখা আপনাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ায় জন্য।বানান ভুল থাকলে কমেন্ট করে জানিয়ে ঠিক করে দেওয়ার সুযোগ করে দিন।সম্পূর্ণ রচনাটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আরও পড়ুন:

প্রাত্যহিক জীবনে বিদ্যুৎ রচনা
দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা
Print Friendly, PDF & Email

মন্তব্য করুন